সাম্প্রতিক পোস্টসমূহ

Posted by : Unknown Thursday, October 30, 2014





যাকে কেন্দ্র করে ১০ই মহররম কারবালার প্রান্তরে হৃদয়-বিদারক ঘটনার অবতারণা হলো, রচিত হলো করুণতম বিয়োগান্ত ইতিহাস; যিনি ইয়াজিদ ইবনে মাবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান (আবু সুফিয়ান এবং তার স্ত্রী হিন্দা, হুজুরপাক (সাঃ) এবং তাঁর অনুসারি ও অনুরাগীগণের প্রতি চরম জিঘাংসা পোষণ করতো) এর প্ররোচনায় প্ররোচিত, প্রলোভনে প্রলুব্ধ আব্দুল্লাহ ইবনে সা'দ, ওবায়দুল্লা ইবনে জিয়াদ, সীমার বিন জিল জৌশন প্রমুখ মুসলমান নামধারী দুশমনে রাসুল, দুশমনে আহলে বায়েত দ্বারা কারবালার ময়দানে আক্রান্ত হলেন - তিনি ঐ আহলে বায়েতের অন্যতম আহলে বায়েত, হযরত আলী-আল-মরতুজা শের-এ খোদা (কঃ)'র হৃদয়ের ধন; সাইয়েদাতুন্নেছা হযরত ফাতেমাতুজজোহরা (রাঃ)'র কলিজার টুকরা; রাসুলেখোদা (সাঃ)'র নুর-এ-নাজার, প্রানের প্রান, সাইয়েদেনা সাইয়েদোশশোহাদা হযরত ঈমাম হোসাইন (আঃ)। যার সম্পর্কে রাসুলেখোদা (সাঃ) একদা বলেছেনঃ
"হোসাইন আমা হতে আর আমি হোসাইন হতে।" (তিরমিযি শরীফ, রাবি- হযরত ইয়ালি-বিন-মারহ)
যাকে একদা হযরত উমর (রাঃ) রাসুলে খোদা (সাঃ)'র স্কন্ধ মোবারক মতান্তরে পিঠ মোবারকে সাওয়ার দেখে আবেগের সাথে বলে উঠেছিলেনঃ
"কতই না উত্তম সাওয়ার"
এতদ শ্রবনে রাসুলে খোদা (সাঃ) বলেছিলেনঃ
"সাওয়ারীওতো কত উত্তম।"
যার ঠোঁট ও গর্দান মোবারকে রাসুলে খোদা (সাঃ) বহুবার চুম্বন খেয়েছিলেন। যাকে উদ্দেশ্য করে তিনি একদা বলেছিলেন - "হে আল্লাহ, এঁকে তুমি ভালবেসো, কেননা আমি এঁকে ভালবাসি।"
প্রাসঙ্গিকক্রমে এখানে 'আহলে-বায়েত' সম্পর্কে কিছু আলোকপাত করতে হয়। 'আহলে-বায়েত' এর আভিধানিক অর্থ পরিবারের সদস্য। কিন্তু রাসুলে খোদা (সাঃ)'র 'আহলে-বায়েত' বা তাঁর পুণ্যময় পরিবারের সদস্য বলতে সাইয়েদেনা হযরত আমিরুল মু'মীনিন আলী-আল-মর্তোজা শেরেখোদা (কঃ), তাঁর সহধর্মিণী ও রাসুলে তনয়া সাইয়েদাতুন্নেছা হযরত ফাতেমাতুজ্জোহরা (রাঃ) এবং তাঁদের দুই পুত্র হযরত ঈমাম হাসান (আঃ) ও হযরত ঈমাম হোসাইন (আঃ) কে বোঝায়। কারন, যখন কোরআনে পাকে এরশাদ হলোঃ
"হে রাসুল, আপনি বলুন, তোমাদের (হেদায়েতের) জন্য আমি যে পরিশ্রম করেছি, তার বিনিময়ে আমার কেরাবাতের প্রতি ভালোবাসা ভিন্ন তোমাদের কাছে আমি আর কিছুই প্রত্যাশা করি না।" (আল-কোরাআন)
তখন সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেনঃ
"ইয়া রাসুলাল্লাহ (সাঃ), আপনার কেরাবাত বা ঐ সকল নিকটতম ব্যাক্তিবর্গ কারা ? যাঁদের প্রতি ভালোবাসা আমাদের জন্য আল্লাহপাক লাজেম করে দিলেন।"
হুজুর (সাঃ) ফরমালেনঃ
"আলী, ফাতেমা এবং তাঁদের পুত্রদ্বয়।"(দোররে মনসুর, রাবি- হযরত ইবনে আব্বাস)
আহলে বায়েতগন আল্লাহ-রাব্বুল ইজ্জাতের নিকট কত প্রিয়, তাঁদের শান ও আজমত তাঁর দরবারে যে কত মহান, উপরোক্ত আয়াতে-কারিমা তার যথার্থ প্রমান। এখানে আল্লাহ-পাক একদিকে যেমনি আহলে বায়েতের প্রতি ভালোবাসা ও প্রেমকে তাঁর সকল বান্দাদের জন্য লাজেম করেছেন, অপরদিকে তেমনি তাঁদের প্রতি স্বীয় ভালোবাসা বা প্রেমকেও প্রকাশ করেছেন। পরোক্ষভাবে তুলে ধরেছেন তাঁদের মহান শা'নকে সকল বান্দার কাছে বিশেষ করে সকল আহলে - ঈমানের কাছে।
সূরা "আররাহমানে" এরশাদ হচ্ছেঃ
"তিনিইতো দুই সাগর প্রবাহিত করেন, যারা পরষ্পর মিলিত হয়।"
"তাদের মধ্য হইতে নির্গত হয়, মুক্তা ও মানিক।"
এই আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বিশিষ্ট সাহাবি হযরত আনেছ বিন-মালেক বলেনঃ
"আল্লাহ -রাব্বুল ইজ্জত এখানে সাগরদ্বয়ের মিলিত প্রবাহ বলতে আলী (কঃ) ও হযরত ফাতেমা (রাঃ) এবং হযরত হাসান (আঃ) ও হযরত হোসাইন (আঃ) কেই বুঝিয়েছেন।"(তাফসিরে দোররা-মনসুর)
সাগর বলতে এখানে নেয়ামতের সাগর বা রহমতের সাগরকে বোঝানো হয়েছে। সাগর যেমনি কুল-কিনারা বিহীন অফুরন্ত পানির আধার, এই সাগরদ্বয়ও তেমনি অফুরন্ত নেয়ামত, অফুরন্ত রহমত, অফুরন্ত বেলায়েত তথা আছরারে-এলাহির অসীম আধার। আল্লাহপাক এখানে অসীম - অফুরন্ত নেয়ামতের, রহমতের, বেলায়েতের সাগরের সাথে, আহলে-বায়েতের অন্যতম প্রধান দুই আহলে বায়েত হযরত আলী (কঃ) এবং হযরত ফাতেমাতুজ্জোহরা (রাঃ) কে তুলনা করে, তাঁদের মহান শান ও আজমাতকে যেমনি বান্দার নিকট তুলে ধরেছেন, ঠিক তেমনি অপর দুই আহলে-বায়েত হযরত ঈমাম হাসান (আঃ) ও হযরত ঈমাম হোসাইন (আঃ)'র মহান শান ও আজমাতকে তুলে ধরেছেন বান্দার নিকট মুক্তা ও মানিকের সঙ্গে তুলনা করে।
 

চলবে...

লেখকঃ এস জি এম চিশতী

Leave a Reply

Subscribe to Posts | Subscribe to Comments

ফেসবুক ফ্যান হয়ে উঠুন

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

মোট পৃষ্ঠাদর্শন

- Copyright © সত্যকে জানুন - Metrominimalist - Powered by Blogger - Designed by Johanes Djogan -