সাম্প্রতিক পোস্টসমূহ
loading..
- Back to Home »
- আকিদা , ইতিহাস , এস জি এম চিশতী , শরীয়ত »
- # আল - ইয়াওমুল - আশুরা (সংকলন) পর্ব - ১
Posted by :
Unknown
Wednesday, October 29, 2014
আরবী তথা ইসলামী সাল বা বৎসরের প্রথম মাস মহররম মাস বা শাহরে মহররম (পবিত্র মাস)। “ইসলাম” শব্দের মূল আভিধানিক অর্থ বা মানায়ে লাগবি ‘আত্নসমর্পন করা’; আর ব্যবহারিক অর্থ বা মানায়ে এস্তে-লাহি ‘শান্তি’। আল্লাহপাকের রেজামুন্দি হাসিলের জন্য তাঁর দরবারে আত্ন-ত্যাগ, আত্নোৎসর্গ করে হৃদয়ে বা প্রানে যে প্রশান্তি অনুভূত হয় বা শান্তি লাভ করা যায় তাই ব্যাবহারিক অর্থে ইসলাম। এর জন্য আল্লাহপাক যে জীবন-বিধান প্রদান করেছেন তাই ইসলাম ধর্ম। এরশাদ হচ্ছেঃ
“আল্লাহ কর্তৃক মনোনীত একমাত্র জীবন-বিধান বা ধর্ম হচ্ছে ইসলাম।”
ইসলাম সূচিত হয়েছে হযরত আদম (আঃ)’র সময়, কাঠামো লাভ করেছে হযরত ইব্রাহিম (আঃ)’র সময়, আর পরিপূর্নতা লাভ করেছে সরকারে দো-আলম, নাবীয়ে দো-জাহা, সাইয়েদুল মুরসালিন রাসুলে আকরাম (সাঃ আঃ)’র মাধ্যমে। কোরআন মজিদে তাই এরশাদ হচ্ছেঃ
“তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্মকে আজ পরিপূর্ন করলাম এবং তোমাদের জন্য আমার সকল নেয়ামত প্রদানও সম্পন্ন হল।”
আল্লাহ-রাব্বুল আলামিন, যিনি খালেক ও মালেক, তাঁর রেজামুন্দি হাসেল, তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও আনুগত্য প্রকাশের নিমিত্ত স্বীয় জান-মাল, যথাসর্বস্ব কোরবানি করা বা বিসর্জন দেয়াই হল ইসলামের মূল আদর্শ ও মূল শিক্ষা। তাই ইসলামী সাল বা বৎসরের এবতেদা কোরবানির মাধ্যমে, আর এন্তেহাও কোরবানির মাধ্যমে। ইসলামী বৎসরের প্রথম মাস "মহররম"- যার দশ তারিখ যেমনি বহন করে কোরবানির এক বে-নজির দৃষ্টান্ত, তেমনি বৎসরের শেষ মাস জিলহজ্জ যার দশ তারিখও বহন করে কোরবানির উজ্জল দৃষ্টান্ত। এই উভয় কোরবানি আল্লাহ-পাকের মহান দরবারে এমনিভাবে মাকবুলিয়াত লাভ করেছে যে, তাঁর বান্দাদের জন্য এই উভয় দিনকে তিনি চিরস্মরনীয় করে রেখেছেন।
মহররম মাস বা শাহরে মহররম যার দশ তারিখ বা ইয়াওমুল-আশুরা যুগ যুগ ধরে প্রতিটি মো’মেন নর-নারী, আশেকে-রাসুল, আশেকে-আহলে বায়েত এর প্রানে দোলা দেয়। জাগ্রত করে একদিকে যেমনি এক হৃদয়-বিদারক বেদনাময় স্মৃতিকে, তেমনি জাগ্রত করে অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে ন্যায় ও সত্যের ঝান্ডাকে উত্তোলন করার জন্য, ন্যায় ও সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এক মহান আত্নত্যাগের গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিকে। এই দিনটিতে আশেকের প্রান যেমনি হৃদয় বিদারক সেই স্মৃতির ব্যাথায় ব্যাথিত, ভারাক্রান্ত; তেমনি আত্নত্যাগের সেই গৌরবময় স্মৃতিমন্থনে গর্বিত; আশেক মাশুকের সেই মহা মিলনের আনন্দে আনন্দিত।
ইয়াওমুল-আশুরা বা আশুরার দিনটি যে কেবল ধর্মপ্রান মুসলমান, আশেকে রাসুল, আহলে ইমান এর নিকটেই পূতঃপবিত্র বা মর্তবাপূর্ণ দিনরূপে স্মরনীয় বা স্বীকৃত তা-ই নয়, হযরত আদম (আঃ) এর জমানা হতেই এই দিনটি প্রত্যেক নবীর উম্মতের, ক্বওমের, আহলে ইমানের নিকটিই পুতঃপবিত্র বা মর্তবাপূর্ণ দিনরূপে বিবেচিত বা স্বীকৃত। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর হাবীব- সাইয়েদুল মুরসালিন (সমস্ত নবিদের সর্দার), সারওয়ারে-কায়েনাত, রাহমাতুল্লিল-আলামিন হযরত রাসুলে খোদা (সাঃ আঃ) যিনি সমস্ত সৃষ্টির একমাত্র উৎস, তাঁরই নূর – এ – নজর, প্রাণাধিক প্রিয়তম দৌহীত্র হযরত ফাতেমাতুজ জোহরা (রাঃ) এর হৃদয়ের ধন হযরত ইমাম হোসাইন (আঃ) কে ঐ শহীদগণ, যাঁদের মর্তবা সম্পর্কে আল্লাহপাক কোরআনে মজিদে একাধিক বার উল্লেখ করেছেন, যাঁদের এক কাতরা রক্তের বিনিময়ে ৭০ হাজার গুনাহগার উম্মতে-মুহাম্মাদী নাজাত বা পরিত্রান লাভ করবে, সেই শহীদগনের সর্দার বা “সাইয়েদোশ-শোহাদার” শ্রেষ্ঠতম মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করবেন বলেই এই দিনটি যুগ যুগ ধরে পূতঃপবিত্র ও মর্তবাপূর্ণ দিনরুপে চিহ্নিত হয়ে আসছে। এই দিনটিতে আল্লাহ – রাব্বুল – আলামিন যুগে যুগে তাঁর রহমতের দুয়ার বান্দার জন্য খুলে দিয়েছেন, রহমতের বারিধারা বর্ষিত হয়েছে তাঁর খাস বান্দাদের উপর। এই দিনে কবুল হয়েছে হযরত আদম (আঃ) এর তওবা; উচ্চ মর্তবা লাভ করেছেন হযরত ইদ্রিছ (আঃ); নির্বাপিত হয়েছিলো হযরত ইব্রাহিম (আঃ) যে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন তা; কিশতী হতে অবতরন করতে সক্ষম হয়েছিলেন হযরত নূহ (আঃ) এবং তাঁর সঙ্গীগন; তাওরাত কিতাব নাযিল হয়েছিলো হযরত মুসা (আঃ) এর উপর; নীল নদ দ্বিধা বিভক্ত হয়েছিলো বনি ইসরাইলদের জন্য; কয়েদখানা হতে মুক্তি লাভ করেছিলেন হযরত ইউসুফ (আঃ); মাছের পেট হতে বের হতে সক্ষম হয়েছিলেন হযরত ইউনুস (আঃ)। আজও বর্ষিত হয়, আজও খুলে দেন তাঁর রহমতের দুয়ার অগনিত গুনাহগার উম্মতে মুহাম্মাদির নাজাতের জন্য, তাওবা কবুল হওয়ার জন্য। এই দিনটি তাই প্রতি বৎসর ফিরে আসে আমাদের কাছে রহমতের সওগাত নিয়ে।
চলবে...
“আল্লাহ কর্তৃক মনোনীত একমাত্র জীবন-বিধান বা ধর্ম হচ্ছে ইসলাম।”
ইসলাম সূচিত হয়েছে হযরত আদম (আঃ)’র সময়, কাঠামো লাভ করেছে হযরত ইব্রাহিম (আঃ)’র সময়, আর পরিপূর্নতা লাভ করেছে সরকারে দো-আলম, নাবীয়ে দো-জাহা, সাইয়েদুল মুরসালিন রাসুলে আকরাম (সাঃ আঃ)’র মাধ্যমে। কোরআন মজিদে তাই এরশাদ হচ্ছেঃ
“তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্মকে আজ পরিপূর্ন করলাম এবং তোমাদের জন্য আমার সকল নেয়ামত প্রদানও সম্পন্ন হল।”
আল্লাহ-রাব্বুল আলামিন, যিনি খালেক ও মালেক, তাঁর রেজামুন্দি হাসেল, তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও আনুগত্য প্রকাশের নিমিত্ত স্বীয় জান-মাল, যথাসর্বস্ব কোরবানি করা বা বিসর্জন দেয়াই হল ইসলামের মূল আদর্শ ও মূল শিক্ষা। তাই ইসলামী সাল বা বৎসরের এবতেদা কোরবানির মাধ্যমে, আর এন্তেহাও কোরবানির মাধ্যমে। ইসলামী বৎসরের প্রথম মাস "মহররম"- যার দশ তারিখ যেমনি বহন করে কোরবানির এক বে-নজির দৃষ্টান্ত, তেমনি বৎসরের শেষ মাস জিলহজ্জ যার দশ তারিখও বহন করে কোরবানির উজ্জল দৃষ্টান্ত। এই উভয় কোরবানি আল্লাহ-পাকের মহান দরবারে এমনিভাবে মাকবুলিয়াত লাভ করেছে যে, তাঁর বান্দাদের জন্য এই উভয় দিনকে তিনি চিরস্মরনীয় করে রেখেছেন।
মহররম মাস বা শাহরে মহররম যার দশ তারিখ বা ইয়াওমুল-আশুরা যুগ যুগ ধরে প্রতিটি মো’মেন নর-নারী, আশেকে-রাসুল, আশেকে-আহলে বায়েত এর প্রানে দোলা দেয়। জাগ্রত করে একদিকে যেমনি এক হৃদয়-বিদারক বেদনাময় স্মৃতিকে, তেমনি জাগ্রত করে অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে ন্যায় ও সত্যের ঝান্ডাকে উত্তোলন করার জন্য, ন্যায় ও সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য এক মহান আত্নত্যাগের গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিকে। এই দিনটিতে আশেকের প্রান যেমনি হৃদয় বিদারক সেই স্মৃতির ব্যাথায় ব্যাথিত, ভারাক্রান্ত; তেমনি আত্নত্যাগের সেই গৌরবময় স্মৃতিমন্থনে গর্বিত; আশেক মাশুকের সেই মহা মিলনের আনন্দে আনন্দিত।
ইয়াওমুল-আশুরা বা আশুরার দিনটি যে কেবল ধর্মপ্রান মুসলমান, আশেকে রাসুল, আহলে ইমান এর নিকটেই পূতঃপবিত্র বা মর্তবাপূর্ণ দিনরূপে স্মরনীয় বা স্বীকৃত তা-ই নয়, হযরত আদম (আঃ) এর জমানা হতেই এই দিনটি প্রত্যেক নবীর উম্মতের, ক্বওমের, আহলে ইমানের নিকটিই পুতঃপবিত্র বা মর্তবাপূর্ণ দিনরূপে বিবেচিত বা স্বীকৃত। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর হাবীব- সাইয়েদুল মুরসালিন (সমস্ত নবিদের সর্দার), সারওয়ারে-কায়েনাত, রাহমাতুল্লিল-আলামিন হযরত রাসুলে খোদা (সাঃ আঃ) যিনি সমস্ত সৃষ্টির একমাত্র উৎস, তাঁরই নূর – এ – নজর, প্রাণাধিক প্রিয়তম দৌহীত্র হযরত ফাতেমাতুজ জোহরা (রাঃ) এর হৃদয়ের ধন হযরত ইমাম হোসাইন (আঃ) কে ঐ শহীদগণ, যাঁদের মর্তবা সম্পর্কে আল্লাহপাক কোরআনে মজিদে একাধিক বার উল্লেখ করেছেন, যাঁদের এক কাতরা রক্তের বিনিময়ে ৭০ হাজার গুনাহগার উম্মতে-মুহাম্মাদী নাজাত বা পরিত্রান লাভ করবে, সেই শহীদগনের সর্দার বা “সাইয়েদোশ-শোহাদার” শ্রেষ্ঠতম মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করবেন বলেই এই দিনটি যুগ যুগ ধরে পূতঃপবিত্র ও মর্তবাপূর্ণ দিনরুপে চিহ্নিত হয়ে আসছে। এই দিনটিতে আল্লাহ – রাব্বুল – আলামিন যুগে যুগে তাঁর রহমতের দুয়ার বান্দার জন্য খুলে দিয়েছেন, রহমতের বারিধারা বর্ষিত হয়েছে তাঁর খাস বান্দাদের উপর। এই দিনে কবুল হয়েছে হযরত আদম (আঃ) এর তওবা; উচ্চ মর্তবা লাভ করেছেন হযরত ইদ্রিছ (আঃ); নির্বাপিত হয়েছিলো হযরত ইব্রাহিম (আঃ) যে অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলেন তা; কিশতী হতে অবতরন করতে সক্ষম হয়েছিলেন হযরত নূহ (আঃ) এবং তাঁর সঙ্গীগন; তাওরাত কিতাব নাযিল হয়েছিলো হযরত মুসা (আঃ) এর উপর; নীল নদ দ্বিধা বিভক্ত হয়েছিলো বনি ইসরাইলদের জন্য; কয়েদখানা হতে মুক্তি লাভ করেছিলেন হযরত ইউসুফ (আঃ); মাছের পেট হতে বের হতে সক্ষম হয়েছিলেন হযরত ইউনুস (আঃ)। আজও বর্ষিত হয়, আজও খুলে দেন তাঁর রহমতের দুয়ার অগনিত গুনাহগার উম্মতে মুহাম্মাদির নাজাতের জন্য, তাওবা কবুল হওয়ার জন্য। এই দিনটি তাই প্রতি বৎসর ফিরে আসে আমাদের কাছে রহমতের সওগাত নিয়ে।
চলবে...
লেখকঃ এস জি এম চিশতী
SubhanAllah.....
ReplyDelete